শামীম তার জন্মের পর থেকে এখন বয়স চল্লিশ বছর নয় মাস এগার দিন পার করেছে, শাহেদ তার থেকে প্রায় পাঁচ বছরের বড়, শামিম শাহেদ দুই জনে খুব ভাল বন্দু, এক জন আরেক জনের সাথে খুব ই কনিস্ট, কেউ কাউকে মনের কথা বলা ছাড়া থাকতে পারে না ,কিন্তু শাহেদের মনে একটা ই প্রশ্ন? শামিমের কাছে কখনো ভালো নেই, সমস্যায় আছি, জামেলা আছে, এমন কোনু কথা এক বারের জন্য ও শোনে নি, ব্যাপার টা শাহেদের কাছে যখন খেয়াল হলো, তখন তো সে এতটা ই অবাক হইলো যে কি ভাবে সম্ভব? শামিম কে প্রশ্ন করে জানবে তা ও ঠিক লাগছে না,
শাহেদ তার অন্যান্য বন্দুদের কাছে জানতে চাইলো যে শামিম এর কাছে কখনো কি তার কোনু প্রকার সমস্যার কথা শুনেছে কি না, যে কয়েক জনের কাছে জিজ্ঞেস করা হইলো সবার উত্তর এক ই যে কখনো শামীম বিপদে আছি সমস্যায় আছি একটু সাহাজ্য দরকার এমন কোনু কথা তার কোনু বন্ধুকে বলে নি, শাহেদ,নাজিম,সোহেল,সিদ্দিক,মাছুম এই পাঁচ জন এক সাথে বসে এই নিয়ে কথা বলছিল, তাদের কথা বলা অবস্তায় শামিম এসে উপস্তিত হলো,
আসসালামু আলাইকুম ও রহমতুল্লাহি ওবারাকাতু, এই ভাবে সবাইকে সালাম দিয়ে কুশল জিজ্ঞেস করলো সবাইকে,শাহেদ রা ও সবাই সালামের উত্তর দিয়ে শামিমের খোজ খবর জানতে চাইলে শামীমের উত্তর আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, শামীমের উত্তর শুনে শাহেদ নাজিম সোহেল রা একে অন্যের দিকে চাওয়া চাওয়ি করলে ও কেউ কোনু কথা বলে না,
শামীম তাদের এই দিকে কোনু লক্ষ্য না করে ই প্রশ্ন করে তোদের কি খবর ,কেমন যাচ্ছে তোদের দিনকাল? শামিমের প্রশ্ন শুনে সবাই একে একে তাদের কথা বলতে থাকে, জমে উঠে ছোট খাট একটা আড্ডা, কিছুক্ষন আড্ডা দেয়ার পর যে জার মতো করে চলে যায় , থাকে শুধু শাহেদ , শামীম বলে চল উঠা যাক, শামীমের কথায় শাহেদ নড়ে ছড়ে বসে, বলে চল, দুই জনে যে জার গন্তব্যের দিকে হাটা শুরু করে,
শাহেদের মনের মাজে জমে থাকা শামিমের সুখি জীবন এর মানে টা কি হতে পারে? এই ভাবনা সে কিছুতে ই তার মন থেকে সরাতে পারছে না, সত্যি ই কি শামিম সুখি? আসলে ই কি তার জীবনে কোনু সমস্যা নেই? না কি সে তার সমস্যার কথা তার বন্দুদের সাথে শেয়ার করে না? এমন তো হবার কথা নয়, কারন শামীম তার জীবনের খুটিনাটি সব ই শাহেদের সাথে শেয়ার করে থাকে,
এই তো সে দিন তার বাসায় সামান্য জালমুড়ি বানিয়ে খাওয়া নিয়ে কি মজা করে ই না একটা গল্প বলে গেল, যে বন্ধু বাড়িতে সামান্য জাল্মুড়ি বানিয়ে খাওয়া নিয়ে গল্প করতে ভুলে না সে সমস্যায় পড়লে তার সাথে শেয়ার করবে না এমন টা হতে পারে না, শাহেদ শামীম কে নিয়ে এতটা ই ভাবনা শুরু করে যে এখন মনে হচ্ছে শামিমের সুখি জীবন টা শাহেদ কে অসুখি করে তুলেছে,
শামীম পেশায় একজন ব্যাংক অফিসার, একটা প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করে, নিজের শহরে ই, শামীমের বাড়ি শহরের কাছে হওয়ায় সে তার নিজ বাড়ি থেকে যাতায়ত করে অফিসে, অফিসে সে তার দায়িত্তে থাকা কাজ সে জতাজত পালন করে, অফিস শেষে ঠিক সময়ে বাড়ি ফিরে আসে, বাড়ি ফেরার পথে সংসারের প্রয়োজনিয় বাজার করে নেয়, বাড়িতে শামিমের মা বাবা ছোট ভাই ছাড়া ও তাদের দুই ভাইয়ের বউ এবং শামিমের দুই সন্তান আর তার ছোট ভাইয়ের একটা সন্তান রয়েছে,
শাহেদের মনে প্রশ্ন? শামিমের পরিবারের কাউকে নিয়ে ও ত সে কখনো কোনু অভিজোগ করতে শুনি নাই, তার স্ত্রীর সাথে ও কখনো কোনু মনমানিল্য হয়েছে এই রকম কোনু কথা শাহেদ কে বলছে তা ও মনে পড়ছে না, how possible ?
শাহেদের এই অবাক করা শামিমের লাইফ স্টাইল নিয়ে ভাবতে গিয়ে সে এখন রিতিমত শামিমের পিছনে গোয়েন্দাগিরি শুরু করে দিয়েছে, শামীম কি করে? কোথায় যায় ? কি বাজার করে? বাবা মায়ের সাথে তার কেমন ব্যাবহার? শামিমের বউয়ের সাথে তার কেমন ব্যাবহার? ছোট ভাইয়ের চাওয়া পাওয়া কি? সব কিছু কে শাহেদ খুঁটিয়ে দেখার চিন্তা করে,
কিন্তু সে তার চলাফেরা আছার ব্যাবহার থেকে কোনু প্রকার স্পেসাল কিছু ই খুজে পায় না , শুধু এই একটা ব্যাপার ই লক্ষ্য করে যে সবার সাথে তার কথা বলার ধরন এবং চলাফেরা টা খূব সাভাবিক, তবে শামিমের কথা বলার ধরন খুব ই চমৎকার, আর সে কথা বলে খুবই ঘুছিয়ে, আর এই ভাবে সে শুধু বাড়ির লোকজন নয় বাড়ির বাহিরে বন্দু বান্দবের সাথে ও এক ই ভাবে কথা বলে, শামিমের সাথে কথা বলে কখনো কারো ই বিরক্তি লাগবে না,
শাহেদ বেশ কয়েক দিন শামিমের চলাফেরা আচরন বিদি পর্যবেক্ষণ করে নিজেই ক্লান্ত , তবুও শামিমের সুখি জীবনের রহস্য বের করতে পারলোনা, কয়েক দিন উন্মাদের মতো চলে শাহেদ অসুস্ত হয়ে পড়ে, শাহেদের অসুস্ততার খবর শামীমের কাছে পৌঁছাইলে শামীম শাহেদ কে দেখার জন্য তার বাড়ির দিকে রওয়ানা দেয়, শাহেদের বাড়ি শামীমের বাড়ীর কাছাকাছি হওয়ায় সেখানে পৌঁছাতে খুব বেশি সময় লাগে না।
শামীম শাহেদের বাড়ীর উঠান থেকে ই শাহেদ কে ডাক দেয়, শাহেদ ''''' বাড়ী আছোত? শামীমের ডাকে শাহেদ জবাব দিয়ে বলে হা ঘরে ই আছি ভেতরে আয়।শামীম শাহেদের ঘরে প্রবেশ করতে করতে শাহেদ কে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করে শুনলাম তোর শরীর অসুস্থ তা কি হয়েছে?
শাহেদ শামীমের প্রশ্নের উত্তর দেয় তেমন কিছু না এই একটু জর ঠান্ডা ঔষধ এনেছি /খাইতেছি ঠিক হয়ে যাবে। তোর কি খবর সব কিছু ঠিক আছে তো?শামীম জবাব দেয় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আর আল্লাহর রহমত সব কিছু ঠিক আছে।
দুই জনের আলাপচারিতা শেষ করে শামীম শাহেদের থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে যায় আর শাহেদ কে বলে যায় সে যেন কোনো প্রয়োজন হলে শামীম কে খবর দেয়।শামীম চলে যাবার পরে শাহেদ তার বউকে ডেকে জিজ্ঞেস করে যে আচ্ছা তুমি কি কখনো শামীমের বউয়ের কাছে তাদের সংসারের কোনো সমস্যা ঝগড়া বিবাদ কথা শুনেছ?
শাহেদের বউ জবাব দেয় কই না তো।শামীম ভাই এর বউ তো কোনো দিন ই তাদের সংসারের কোনো সমস্যা ঝগড়া বিবাদ হইছে এমন কেনো কথা গল্পের ছলে ও বলেন নি।কিন্তু তুমি এই কথা জিজ্ঞেস করছো কেন কি হয়েছে কোনো সমস্যা?
মেয়ে মানুষ এর মধ্যে একটা দুশ তারা কিছু শুনলে আর কৌতুহলের শেষ থাকে না। শাহেদের বউ ও এর ব্যাতিক্রম নয়।শাহেদের প্রশ্ন শুনার পর থেকে সে শামিম তার বউ তাদের পরিবার নিয়ে নানান প্রকার প্রশ্ন করে শাহেদ কে রীতিমত বিব্রত করে ছাড়লো।শাহেদ একটা সময় বিরক্ত হয়ে বউকে ধমক দিয়ে থামাতে হইলো,
সুন্দর,,, কিন্তু পুরোটা শেষ করেন,
উত্তরমুছুনসুন্দর হয়েছে পুরো পুরি শেষ করেন
উত্তরমুছুন