📖 বই নিয়ে গবেষণা ও তার আলোকে পবিত্র আল কুরআন
ভূমিকা:
মানুষের জ্ঞান অর্জন ও বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হলো বই। যুগে যুগে, সমাজ-সভ্যতার অগ্রযাত্রায় বই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এসেছে। ইতিহাস, বিজ্ঞান, দর্শন, সাহিত্য কিংবা ধর্মীয় বিধান — সব কিছুই লিপিবদ্ধ হয়েছে বইয়ের পাতায়। তবে বইয়ের প্রকৃত মর্যাদা ও তাৎপর্য আমরা অনুধাবন করতে পারি যখন আমরা তা কুরআনের আলোকে বিচার করি। কেননা, পবিত্র আল কুরআন নিজেই একটি মহাগ্রন্থ, যা পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানিত ও শ্রেষ্ঠ বই।
বই নিয়ে গবেষণা:
বিশ্বব্যাপী বই নিয়ে নানাবিধ গবেষণা হয়েছে। বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, এবং শিক্ষাবিদরা বইয়ের প্রভাব নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁদের মতে:
-
বই মানুষের চিন্তাভাবনা, মূল্যবোধ ও আচরণে প্রভাব ফেলে।
-
একটি ভালো বই মানুষের মননশীলতা ও চরিত্র গঠন করে।
-
শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিকাশে বই অপরিহার্য।
-
বই হলো ইতিহাসের ধারক ও বাহক।
বইয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো নিয়ে যখন আমরা গবেষণা করি, তখন দেখা যায় — যুগে যুগে মানবজাতির উন্নতির পেছনে বইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিশেষ করে ধর্মগ্রন্থসমূহ মানবজীবনকে আলোর পথ দেখিয়েছে।
আল কুরআনের আলোকে বইয়ের গুরুত্ব:
পবিত্র আল কুরআনে ‘কিতাব’ শব্দটি বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে। ‘কিতাব’ অর্থ বই। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ইরশাদ করেন:
ذَٰلِكَ ٱلۡكِتَٰبُ لَا رَيۡبَۛ فِيهِۛ هُدٗى لِّلۡمُتَّقِينَ
“এটি সেই কিতাব (বই), এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি মুত্তাকীদের জন্য পথপ্রদর্শক।”
— (সূরা আল-বাক্বারাহ: ২)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, আল্লাহ তায়ালার নিকট কিতাব তথা বইয়ের মর্যাদা কত উঁচু। কুরআন শুধু একটি ধর্মীয় গ্রন্থ নয়; বরং এটি জীবনবিধান, মানবতা, নৈতিকতা, সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন।
কুরআন কেন শ্রেষ্ঠ বই:
গবেষণা অনুযায়ী, একটি বই শ্রেষ্ঠ তখনই হয়, যখন তা মানুষের চিন্তাধারায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনে এবং মানবকল্যাণে সহায়ক হয়। এই দিক দিয়ে কুরআন:
-
মানবজাতিকে ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দের পার্থক্য শেখায়।
-
নৈতিক চরিত্র গঠন করে।
-
সমাজ ও রাষ্ট্রে ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠা করে।
-
আত্মশুদ্ধি ও পরকালীন মুক্তির পথ দেখায়।
-
বিজ্ঞানের নানা বিষয়ের ইঙ্গিত প্রদান করে।
উপসংহার:
বই নিয়ে গবেষণা আমাদেরকে শিক্ষা দেয়, একটি বই কিভাবে একটি জাতিকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত সর্বশ্রেষ্ঠ বই হলো পবিত্র আল কুরআন। এই মহাগ্রন্থের আলোকে চললে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব। সুতরাং, আমাদের উচিত — বই পড়ার সংস্কৃতি গড়ে তোলা এবং আল কুরআনকে জীবনের পথপ্রদর্শক হিসেবে গ্রহণ করা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন