মানুষের মধ্যে সভ্যতা, নৈতিকতা ও মানবিকতা — এই গুণগুলো না থাকলে, তার কাছে নেতৃত্বের আসন দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ, নেতৃত্ব মানে শুধু ক্ষমতা নয়; এটি দায়িত্ব, মূল্যবোধ এবং অন্যের কল্যাণের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি।
যে ব্যক্তির আচরণ অসভ্য, যিনি শিষ্টাচার জানেন না, সহনশীলতা ও শ্রদ্ধাবোধের অভাব রয়েছে — তার নেতৃত্ব সংগঠন বা সমাজ উভয় ক্ষেত্রেই বিভ্রান্তি, বিশৃঙ্খলা এবং অবিচারের জন্ম দেয়।
কেন এমন ব্যক্তিকে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত নয়:
* সংগঠনের পরিবেশ নষ্ট হয়: অসভ্য আচরণ সম্পন্ন নেতা তার অধীনস্থদের সাথে অপমানজনক ও রূঢ় আচরণ করে। এতে কাজের পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে পড়ে। কর্মীদের উৎসাহ হারিয়ে যায়।
* সমাজে অস্থিরতা তৈরি করে: নেতৃত্ব মানেই মানুষের সামনে একটি আদর্শ স্থাপন করা। যদি নেতা নিজেই অসভ্য আচরণ করে, তবে সমাজের ভেতরেও সেই প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ে।
*গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পক্ষপাতিত্ব: অসভ্য আচরণকারী নেতৃত্ব সাধারণত ব্যক্তিস্বার্থে সিদ্ধান্ত নেয়। এতে অন্যায়-অবিচার বাড়ে।
এমন হাজার এ কথা লিখা যাবে মনে হচ্ছে।
উদাহরণ:
-
একটি অফিসে এমন এক ম্যানেজার ছিলেন, যিনি কর্মীদের কাজের ভুল ধরার নামে সবসময় তিরস্কার করতেন, অপমান করতেন। ফলে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা এবং কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছিল। অফিসের উৎপাদনশীলতা কমে যায়, অনেকে চাকরি ছেড়ে চলে যায়। এক সময় সে অফিস টা বন্দ্ব করে দিতে হয়।
-
একটি সামাজিক সংগঠনে এক নেতা তার সমালোচনা শুনলেই রাগান্বিত হতেন, অপমানজনক কথা বলতেন। ফলে সদস্যদের মধ্যে ঐক্য নষ্ট হয়। সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। পরবর্তীতে সে সংগঠন টি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।
এই উদাহরন গুলো ও সমাজে অহরহ আছে।
এই উদাহরণগুলো প্রমাণ করে যে, সভ্য আচরণহীন নেতৃত্ব একদিকে সংগঠনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়, অন্যদিকে সমাজে বিভেদ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।
উপসংহার:
নেতৃত্বের আসনে এমন ব্যক্তিকে বসানো উচিত, যার মধ্যে নৈতিকতা, সহনশীলতা, মানবিকতা এবং শিষ্টাচার আছে। তিনি কেবল নিজের স্বার্থ নয়, বরং সংগঠন ও সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে কাজ করবেন।
সভ্য আচরণই প্রকৃত নেতৃত্বের প্রথম শর্ত।
জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে কথা গুলো লিখেছি। কোনো ব্যাক্তি বা সংগঠন কে উদ্দ্যেশ্য করে নয়। তাই পড়ার পরে যে কারো জীবনের সাথে মিলে গেলে তা নিতান্ত ই কাকতালীয় মাত্র।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন