বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিজেকে কখনো জড়াতে পারিনি। কেন পারিনি? তার উত্তর খুজতে গেলে অনেক কথা লিখতে হয়।চেষ্টা করি সল্প লিখনিতে বাংলাদেশের রাজনীতি আর তার সাথে নিজেকে কখনো ই জড়াতে না পারার কিছু ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা। আমি নিজে জানি যে আমি কোনো রাজনীতির সাথে জড়িয়ে নেই।কিন্তু আমার আশেপাশের মানুষ বা সমাজের চোখে প্রত্যেকেই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে আছি।এই টা ই এ দেশের মানুষের চিন্তা চেতনা সবার বেলায় হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে রাজনীতি যে বা যাহারা করেন তাদের চরিত্রের মধ্যে আমি আমার দৃষ্টিতে যে ভাবে দেখি তা সাধারনত খুবই রহস্যময়। ভেতর বাহির সমাজ দেশ নিজের দলের ব্যাপারে অন্য দলের ব্যাপারে আলাদা আলাদা ভাবে আচরন করেন।আর সে আলাদা আচরনের মধ্যে নেতিবাচক চালচলন বেশি লক্ষ্য করা যায়। তার কিছু আলোচনা করা যাক।
বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের চরিত্র নিয়ে কথা বলতে গেলে বিষয়টি খুবই সংবেদনশীল হলেও বাস্তবতা এড়িয়ে যাওয়া যায় না। রাজনীতি আসলে জনগণের সেবা, ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠা ও দেশ উন্নয়নের মহান দায়িত্ব। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশে অনেক সময় রাজনীতি ক্ষমতা, প্রভাব ও ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হয়ে গেছে।
কিছু রাজনীতিবিদ নীতি-আদর্শকে গুরুত্ব না দিয়ে দলীয় স্বার্থ ও ব্যক্তিগত লাভকে অগ্রাধিকার দেন। জনগণের কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে অনেকেই সেই প্রতিশ্রুতি ভুলে যান। ফলে দুর্নীতি, পক্ষপাতিত্ব, অযোগ্য লোককে প্রাধান্য দেওয়া—এসব প্রবণতা সমাজে অবিচার ও হতাশা সৃষ্টি করে।
তবে সব রাজনীতিবিদ একই রকম নন। দেশে এখনো এমন অনেক নেতাও আছেন যারা সততা, ত্যাগ ও দেশপ্রেমকে গুরুত্ব দিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। কিন্তু সংখ্যায় তারা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় ইতিবাচক পরিবর্তন ধীরগতিতে হয়।
যদি রাজনীতিবিদরা ব্যক্তিগত স্বার্থের চেয়ে দেশ ও জনগণের স্বার্থকে আগে রাখেন, সততা ও জবাবদিহিতা মেনে চলেন, তবে রাজনীতি আবার মানুষের আস্থার জায়গায় ফিরে আসতে পারে। নীতি, সততা ও সেবার মানসিকতা ছাড়া প্রকৃত অর্থে রাজনীতি সফল হয় না।কিন্তু এখন ও সে পরিবর্তন রাজনীতিতে লক্ষ্যনিয় নয়।
বাংলাদেশের রাজনীতিবিদের চরিত্রে ভিন্ন দল বা মতের প্রতি আচরণ অনেক সময়ই গণতান্ত্রিক আদর্শের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয় না। রাজনৈতিক মতপার্থক্যকে স্বাস্থ্যকর বিতর্ক বা গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সমাধান করার পরিবর্তে অনেক নেতাই তা ব্যক্তিগত শত্রুতা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর্যায়ে নিয়ে যান। ফলে ভিন্ন মতের প্রতি সহনশীলতা, শ্রদ্ধা ও পারস্পরিক সহযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠে না।
অনেক সময় দেখা যায়, বিরোধী দলের ভালো উদ্যোগকেও শুধু দলীয় স্বার্থের কারণে বিরোধিতা করা হয়, যেন অন্যের সাফল্য মানে নিজের ক্ষতি। সংসদ, মিডিয়া বা জনসভায় তীব্র ভাষা, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ প্রায়ই রাজনৈতিক আচার-আচরণের অংশ হয়ে দাঁড়ায়। এতে জনগণের মধ্যে বিভক্তি বাড়ে এবং রাজনৈতিক পরিবেশ হয় বিষাক্ত।
আসলে গণতন্ত্রে ভিন্ন দল বা মতের প্রতি সহনশীলতা, যুক্তিপূর্ণ আলোচনা ও পারস্পরিক সম্মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা, দলীয় একচ্ছত্রতা ও ক্ষমতার লোভের কারণে এই সংস্কৃতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক নেতাদের মানসিকতা পরিবর্তন, গণতান্ত্রিক চর্চা জোরদার করা এবং ভিন্নমতের প্রতি ইতিবাচক আচরণ গড়ে তোলা।কিন্তু বাংলাদেশের রাজনূতিবিদের মধ্যে কখনো ই ভিন্ন দল/মতের প্রতি শ্রদ্বাবোধ লক্ষ্য করা যায় না।
মেধাবী মানুষের বাংলাদেশের রাজনীতিতে না আসার কয়েকটি কারন তুলে ধরা যাক।
বাংলাদেশে মেধাবীদের রাজনীতিতে আসতে অনীহা থাকার পেছনে কয়েকটি বড় কারণ রয়েছে—
* নোংরা ও সহিংস রাজনীতির পরিবেশ
রাজনীতিকে জনসেবার পরিবর্তে ব্যক্তিস্বার্থ, ক্ষমতা দখল ও প্রতিপক্ষ দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সহিংসতা, দমন-পীড়ন, অপমানের আশঙ্কা মেধাবীদের নিরুৎসাহিত করে।
* আদর্শ ও নীতির অভাব
অনেক রাজনৈতিক দলেই যোগ্যতার চেয়ে আনুগত্য, স্বজনপ্রীতি ও অর্থবলকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। নীতি-আদর্শকে প্রাধান্য না দেওয়ায় সৎ ও যোগ্য মানুষ টিকে থাকতে পারেন না।
* দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির সংস্কৃতি
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে গেলে নিজের নিরাপত্তা, সম্মান ও ক্যারিয়ার ঝুঁকিতে পড়ার ভয় থাকে। মেধাবীরা সাধারণত নিজের মর্যাদা ও সততা রক্ষাকে অগ্রাধিকার দেন।
* স্থিতিশীল ও নিরাপদ ক্যারিয়ারের প্রতি ঝোঁক
প্রতিভাবান তরুণরা পড়াশোনা শেষে ভালো পেশায় যুক্ত হতে চান—যেখানে সম্মান, স্থিতিশীলতা ও উন্নতির সুযোগ বেশি। রাজনীতিতে এসব নিশ্চিত নয়।
* রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা
প্রায়ই হরতাল, অবরোধ, গ্রেপ্তার, মামলা—এসব ঝুঁকি মেধাবীদের দূরে রাখে। পরিবার থেকেও রাজনৈতিক ঝুঁকি নিতে নিরুৎসাহিত করা হয়।
* স্বচ্ছ নেতৃত্বের অভাব
মেধাবীরা এমন নেতৃত্ব চান, যেখানে সৎ উদ্দেশ্য, ন্যায্যতা ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন ভাবনা থাকবে। কিন্তু অনেক সময় নেতৃত্বে সেই অনুপ্রেরণা না থাকায় তারা আগ্রহ হারান।
* সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি
অনেকের চোখে রাজনীতি মানেই ‘খারাপ লোকের কাজ’। এই সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও শিক্ষিত, যোগ্য ও নীতিবান মানুষকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।
অসমাপ্ত""""""""""""
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন