শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫

চাহিদা যত কম শান্তি তত বেশি,

জীবন নিয়ে যত আকাঙ্ক্ষা কম, সে জীবনে শান্তি তত বেশি

আমরা সবাই জীবনে সুখ খুঁজি। কেউ খোঁজে ধন-সম্পদে, কেউ খ্যাতিতে, কেউ ভালোবাসায়। কিন্তু শান্তি—সেই অন্তরের প্রশান্তি, যেটা সব কিছুর ওপরে—তা আমরা খুঁজে ফিরি ভুল পথে। আসলে, যতক্ষণ না আমরা বুঝতে পারি যে অধিক চাওয়াই অধিক অশান্তির মূল, ততক্ষণ আমরা শান্তি খুঁজেও পাই না।

আকাঙ্ক্ষা—এটা স্বাভাবিক, মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। কিন্তু এই আকাঙ্ক্ষা যখন সীমাহীন হয়, তখন তা পরিণত হয় এক অনন্ত অসন্তুষ্টিতে। আমরা একটি অর্জন করেই পরের দিকে দৌড়াই। নতুন বাড়ি, নতুন গাড়ি, বড় পদ, বেশি টাকা—সব কিছুর পিছনে ছুটতে ছুটতে আমরা হারিয়ে ফেলি নিজের অস্তিত্ব, নিজের সময়, এমনকি নিজের মানুষগুলোকেও।

এমন নয় যে স্বপ্ন দেখা বা উন্নতির ইচ্ছে খারাপ। কিন্তু সেই ইচ্ছেগুলো যখন আমাদের শান্তি হরণ করে, তখনই তা বিপদ ডেকে আনে। জীবন তখন হয়ে ওঠে প্রতিযোগিতার ময়দান, যেখানে কেউই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয় না। কারণ আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই।

সীমিত চাওয়া মানেই সংযম। আর সংযমেই শান্তি। যাকে আমরা “Minimalism” বলি—কম নিয়ে বাঁচা, কিন্তু গভীরভাবে বাঁচা। সহজ জীবন, সহজ চাহিদা—এই হল প্রকৃত সুখের চাবিকাঠি।

কোনো এক দার্শনিক বলেছিলেন, “সবচেয়ে ধনী সেই ব্যক্তি, যার চাওয়ার পরিমাণ সবচেয়ে কম।” কারণ সে ব্যক্তি যা পেয়েছে, তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে শেখে। সে জানে—শান্তি বাইরে নয়, নিজের ভেতরে।

তাই আজ একটু থামুন। নিজের জীবনকে দেখুন। সত্যিই কি যা চাইছি, তার সবটাই দরকার? নাকি কিছু ছাড় দিলেই মিলবে অনেক বেশী মানসিক প্রশান্তি?

জীবন নিয়ে যত আকাঙ্ক্ষা কম, সে জীবনে শান্তি তত বেশি—এটা শুধু একটা লাইন নয়, এটা একটা জীবনদর্শন।



তাই আবার ও বলছি

জীবন নিয়ে যত আকাঙ্ক্ষা কম, সে জীবনে শান্তি তত বেশি।

! নিচে সল্প চাহিদার (কম চাহিদার) উপকারিতা নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত রচনা দেওয়া হলো:

সল্প চাহিদার উপকারিতা

মানুষের জীবনে চাহিদা একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে চাহিদা যদি সীমিত ও সল্প হয়, তা মানুষের জীবনকে আরও সহজ, শান্তিপূর্ণ ও সুখময় করে তোলে। সল্প চাহিদার মূল উপকারিতা হলো মানসিক শান্তি ও আত্মতৃপ্তি। যখন আমাদের চাহিদা কম থাকে, তখন আমরা যা পাই তাতেই সন্তুষ্ট থাকি, ফলে হতাশা ও দুঃখবোধ আমাদের মাঝে কম থাকে।

সল্প চাহিদা মানুষকে অপচয় থেকে বিরত রাখে। কম চাহিদা থাকলে আমরা প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত কিছু কেনার প্রবণতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারি, যা অর্থ সাশ্রয়ে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি পরিবেশ সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখে, কারণ অপ্রয়োজনীয় ভোগবিলাস কম হলে প্রকৃতির ওপর চাপ কম পড়ে।

এছাড়াও, সল্প চাহিদা জীবনের প্রতি এক ধরণের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে। এতে করে ব্যক্তি সহজেই খুশি থাকতে শেখে এবং ছোট ছোট আনন্দকে উপভোগ করতে পারে। ফলে সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়।

সব মিলিয়ে, সল্প চাহিদা শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজ ও পরিবেশের জন্যও উপকারী। তাই জীবনকে সহজ ও সুন্দর করতে হলে আমাদের চাহিদাকে সীমিত রাখা উচিত।

নিচে “অতিরিক্ত চাহিদায় মানুষ তার জীবনের শান্তি হারিয়ে ফেলে” বিষয়টি নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত রচনা দেওয়া হলো:

অতিরিক্ত চাহিদায় মানুষ তার জীবনের শান্তি হারিয়ে ফেলে

মানুষের জীবনে চাহিদা থাকা স্বাভাবিক। বেঁচে থাকার জন্য মৌলিক চাহিদাগুলোর যেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার প্রয়োজন, তেমনি উন্নতির জন্য কিছু অতিরিক্ত চাহিদাও গড়ে ওঠে। কিন্তু যখন এই অতিরিক্ত চাহিদা মাত্রাতিরিক্ত হয়ে পড়ে, তখন তা মানুষের জীবনে অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

অতিরিক্ত চাহিদা মানুষকে কখনোই সন্তুষ্ট হতে দেয় না। আজ যে জিনিসটি চাই, কাল তা পেলে নতুন আরেকটি চাওয়া মাথা তুলে দাঁড়ায়। ফলে মানুষ এক ধরনের অসন্তুষ্টির বৃত্তে আটকে যায়। এই চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে মানুষ দৌড়ায় দিনরাত, সময় পায় না নিজের জন্য, পরিবার বা প্রিয়জনদের জন্য। মানসিক চাপ, ক্লান্তি, প্রতিযোগিতার ভীড় — সব মিলে জীবনের শান্তি কোথায় হারিয়ে যায়, তা মানুষ নিজেই বুঝতে পারে না।

চাহিদা সীমিত হলে জীবন সহজ হয়, সময় থাকে প্রকৃতি উপভোগ করার, সম্পর্ক রক্ষা করার, নিজের আত্মিক উন্নয়নের। অতিরিক্ত চাহিদা যখন লোভে রূপ নেয়, তখন তা শুধু নিজের শান্তিই কেড়ে নেয় না, সমাজেও অস্থিরতা সৃষ্টি করে।

অতএব, জীবনে শান্তি চাইলে আমাদের উচিত প্রয়োজন আর লোভের পার্থক্য বোঝা এবং সীমিত চাহিদায় সন্তুষ্ট থাকা। তাতেই মিলবে প্রকৃত সুখ ও মানসিক প্রশান্তি।

জীবন নিয়ে যত আকাঙ্ক্ষা কম, সে জীবনে শান্তি তত বেশি—এটা শুধু একটা লাইন নয়, এটা একটা জীবনদর্শন।



শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫

ভালো লাগে তাই লিখি,

আমার লিখতে অনেক ভালো লাগে তাই লিখি। আমার লেখা পড়ে কেউ বাহবাহ দিলো বা প্রসংসা করলো কি না তা নিয়ে ভেবে দেখা হয় নি। যে কোনু কাজের শেষ সেই কাজের জন্য মানুষ তার মুল্যায়ন চায়।সেই মুল্যায়নের পরে যদি তা ইতিবাচক হয় তা হলে সে কাজের জন্য যে কাজটা করলো সে আত্বতিপ্তি পায়।আর ও কিছু কাজের জন্য উৎসাহিত হয়। নেতিবাচক হলে কিছুটা খারাপ  লাগে। মনের দিক থেকে ভেংগে পড়ে। 

প্রশংসা এবং সমালোচনা—এই দুটি বিষয় মানুষের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। প্রত্যেকেই চায় তার কাজের স্বীকৃতি মিলুক, আর সেই স্বীকৃতি যখন প্রশংসা রূপে আসে, তখন তা মানুষকে অনুপ্রাণিত করে, আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করার উৎসাহ দেয়। অপরদিকে, সমালোচনা—যদি তা গঠনমূলক হয়—তাহলে তা একজন মানুষকে নিজের ভুল বুঝতে সাহায্য করে এবং নিজেকে উন্নত করার সুযোগ করে দেয়। তবে অযাচিত বা নেতিবাচক সমালোচনা অনেক সময় মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে। তাই প্রশংসা ও সমালোচনার মধ্যে ভারসাম্য থাকা জরুরি। একজন সচেতন ব্যক্তি প্রশংসায় অহংকারী না হয়ে বিনয়ী থাকে এবং সমালোচনায় ভেঙে না পড়ে শিক্ষাগ্রহণ করে। এই দুটি দিকই জীবনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।



মূল্যায়নের চাওয়া আর আত্মতৃপ্তির গল্প

আমি লিখতে ভালোবাসি। ভালো লাগা থেকেই লেখা শুরু—কোনো বাহবা বা প্রশংসার আশায় নয়। কখনো ভাবিনি আমার লেখায় কেউ মুগ্ধ হবে কি না, কিংবা প্রশংসার ফুল ঝরাবে কি না। শুধু মনের ভিতরের কথা, অনুভব, চিন্তা—সবই কলমে তুলে ধরি নিজের শান্তির জন্য।

তবে মানুষ তো সমাজবদ্ধ প্রাণী। কাজ শেষে কেউ যদি বলে, "ভালো করেছো", তখন একটা অদ্ভুত তৃপ্তি কাজ করে। মনে হয়, হ্যাঁ, কিছু একটা করেছি যার মূল্য আছে। সেই মূল্যায়ন যদি ইতিবাচক হয়, তাহলে আত্মতৃপ্তির পাশাপাশি নতুন করে কিছু করার প্রেরণাও জাগে।

কিন্তু যদি মূল্যায়নটা নেতিবাচক হয়? তখন একটু খারাপ তো লাগেই। মনে হয়, এত কষ্ট করে যা করলাম, তা হয়তো ঠিক হয়নি। কিছুটা ভেঙে পড়ি, প্রশ্ন করি নিজেকেই—আমি কি তাহলে ভুল ছিলাম?

তবুও আবার কলম ধরি। কারণ আমি লিখি নিজের ভালো লাগার জন্য। মানুষের মত, অনুভব, ভালোলাগা বা খারাপ লাগা—সবই থাকে সেই লেখার ভিতর। প্রশংসা বা সমালোচনার ঊর্ধ্বে গিয়েও যে ভালোবাসা নিয়ে লিখি, সেটাই শেষ পর্যন্ত আমাকে টিকে থাকতে সাহায্য করে।