কোনু বই পুস্তক বা ডকুমেন্টারি দেখে নয় সমাজের বাস্তব চিত্র দেখে আর আমার একান্ত ব্যাক্তিগত চিন্তা থেকে বলছি। আশির দশকে সিলেটের মাটিতে জন্ম। যে মাটি বা জমিন হচ্ছে হযরত শাহজালাল / হযরত শাহপরান এবং তাদের সফর সঙ্গী ৩৬০ আউলিয়ার বিচরন ভুমি। ইতিহাস অনুযায়ী হযরত শাহজালাল সিলেটে আগমন করিছিলেন ১৩০৩ সালে। সে হিসাব অনুযায়ী হাজার বছররের ও বেশি সময় অতিক্রম হয়ে গেছে। ইতিহাস ,হুজুরদের ওয়াজ, হযরত শাহজালাল (রাঃ) জীবনী, এবং পুরোনু দিনের লোক মুখে শুনে যা আমরা জানতে পেরেছি এবং তার থেকে বুজেছি তার সারমর্ম হচ্ছে ইরাকের বাগদাদ নগরি থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দ্যেশে তিনি এই বাংলায় আগমন করেছিলেন।
ইসলাম প্রচারে তিনি সফল ও হয়েছেন। তার সাথে লড়াই করে পরাজিত হয়েছেন তখনকার ক্ষমতাবান রাজা। তার ইসলাম প্রচারের সময় কালে দুই চার টা কেরামতের বর্ণনা ও কিছু বইয়ের পাতায় এবং লোক মুখে শুনা যায়। সব গুলো বিশ্বাস যোগ্য না হলে ও কিছু ঘটনা আছে তা গ্রহন যোগ্য। এবং বিশ্বাস ও করি। কিন্তু তার ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে জমায়েত হয়ে ওরশ করার নামে মজলিশ বসিয়ে গান করেছেন এমন কোনু গল্প কারো কাছে শুনি নাই।
তার কোনু আদেশ নিশেদের বক্তব্য বই আকারে লেখা আছে তা ও আমার জানা নেই। তবে তিনি ছিলেন আল্লার ওলি বা প্রিয় বান্দা তা স্বীকার করতে কোনু সন্দেহ নেই। আর ইসলাম প্রচারের জন্য যে বক্তব্য সবার থাকে তা আমার বুজে বলে ঠিক এই রকম। আল্লাহ এক। আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা যাবে না। হযরত মোহাম্মদ সাঃ আল্লাহর রাসুল। রাসুলের কাছে আসা আল্লাহর বানি আল কোরআন। সেই কোরআন বুজে পড় তোমরা প্রত্যেকে। রাসুল সাঃ এই এই ভাবে চলতেন। তোমরা ও এই ভাবে চল। এই কথার মধ্যে ই ইসলামের সব কিছু চলে আসে।
কিন্তু বাংলাদেশে মাজারের মধ্যে যে সকল ওরসের নামে প্রচলিত গানের আয়োজন হয় তা ইসলামের বিষয় নয়। হিন্দুবাদ থেকে সমাজের চলমান কিছু ধারা কে প্রতিষ্ঠিত রা হয়েছে।
ইসলামের সাথে গানের সম্পর্ক
ইসলামের প্রাথমিক যুগে গান বা সংগীতের অবস্থান ছিল একটি সংবেদনশীল বিষয়। ইসলামের আগমনের আগে আরব সমাজে কবিতা, সংগীত ও বাদ্যযন্ত্র ছিল খুব জনপ্রিয়। সেই সময় আরবরা যুদ্ধ, প্রেম, প্রার্থনা, প্রশংসা ও শোক প্রকাশের জন্য কবিতা এবং সংগীতের আশ্রয় নিত।
ইসলাম প্রচার শুরুর পর এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনেকটাই নতুন করে ব্যাখ্যা করা হয়। নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগেও সংগীতের কিছু গ্রহণযোগ্য ধারা বিদ্যমান ছিল। যেমন — বিয়ের অনুষ্ঠানে, ঈদের আনন্দে, বিজয়ের আনন্দে বা কোনো বিশেষ উপলক্ষে কিছু গান অনুমোদিত ছিল।
হাদিসে পাওয়া যায়, একবার ঈদের দিনে আনসার নারীরা دف (ডাফ) নামক বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গান করছিল। তখন নবীজি (সা.) তাদের থামাননি বরং তা উপভোগ করার অনুমতি দিয়েছিলেন।
তবে গান-বাজনার ক্ষেত্রে ইসলামের অবস্থান নির্ভর করত গানের বিষয়বস্তু এবং উদ্দেশ্যের উপর। যেসব গান আল্লাহর অবাধ্যতা, অশ্লীলতা, মদ্যপান, বেহায়াপনা কিংবা অন্যায় কাজের দিকে আহ্বান করত — তা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। অপরদিকে, যে সংগীত মানুষকে নৈতিকতা শেখায়, আল্লাহর স্মরণে উৎসাহিত করে বা সমাজের কল্যাণে ভূমিকা রাখে, তাকে সীমিত পরিসরে অনুমোদন দেওয়া হয়।
সুফি ধারায় ইসলামের সংগীতের এক অনন্য রূপ দেখা যায়। সুফিরা ‘সামা’ নামক আধ্যাত্মিক সংগীতানুষ্ঠান আয়োজন করত, যেখানে সংগীতের মাধ্যমে আল্লাহর প্রেমে ডুবে যাওয়াকে অনুশীলন করা হতো। এই ধারার গানগুলো ছিল মূলত আল্লাহর প্রেম, নবীজির প্রশংসা এবং আধ্যাত্মিক সাধনার উপর।
উপসংহার
ইসলামের সাথে গানের সম্পর্ক ইতিহাসে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বিষয়। ইসলাম গানের প্রতি একেবারে নেতিবাচক নয়, বরং গানের বিষয়বস্তু, উদ্দেশ্য ও পরিবেশের উপর ভিত্তি করে তা গ্রহণ বা বর্জনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। ভালো কথা, নৈতিকতা, আল্লাহর স্মরণ এবং মানবিক মূল্যবোধের বার্তাবাহী গান ইসলামে অনুমোদিত এবং সম্মানিত। অন্যদিকে, অশ্লীলতা, অনৈতিকতা এবং পাপ কাজে উৎসাহিত করা গানকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন