শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫

নিয়ম মেনে চলার উপকার

নিয়ম মেনে চলার উপকারিতা:

নিয়ম মেনে চলা আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস, যা ব্যক্তি, সমাজ এবং রাষ্ট্র—সব পর্যায়েই শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিচে নিয়ম মেনে চলার কিছু উপকারিতা নিয়ে লিখার চেষ্টা মাত্র। 


 

* শৃঙ্খলা বজায় থাকে: নিয়ম মেনে চললে ব্যক্তি জীবন এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়, যা উন্নতির পথকে সহজ করে তোলে।

*নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়: ট্রাফিক নিয়ম বা আইন-কানুন মেনে চললে দুর্ঘটনা কমে এবং ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়।

*সামাজিক শান্তি বজায় থাকে: সবাই যদি নিয়ম মেনে চলে, তাহলে ঝগড়া-বিবাদ, অপরাধপ্রবণতা ইত্যাদি কমে যায়, ফলে সমাজে শান্তি বিরাজ করে।

*সাফল্য অর্জন সহজ হয়: একজন ছাত্র যদি নিয়মিত পড়াশোনা করে ও সময় মেনে চলে, তবে তার পক্ষে সফল হওয়া সহজ হয়। একই কথা পেশাগত জীবনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

*ভালো নাগরিক হওয়া যায়: নিয়ম মেনে চললে আমরা দায়িত্বশীল এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে সমাজে অবদান রাখতে পারি।

*মানসিক শান্তি পাওয়া যায়: নিয়মিত জীবনযাপন করলে মনে এক ধরনের স্থিরতা ও আত্মতৃপ্তি আসে, যা মানসিক শান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

*অন্যের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হওয়া যায়: নিয়মিত এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ মানুষ সমাজে সম্মান ও বিশ্বাস লাভ করে।

সারাংশ:
নিয়ম মেনে চলা কেবল নিজের জন্য নয়, বরং পুরো সমাজের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের জীবনকে সফল, নিরাপদ ও শান্তিময় করে তোলে।


শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

মানিয়ে নেওয়ার নামই শান্তি

জীবন নিয়ে অভিযোগ নয়, মানিয়ে নেওয়ার নামই শান্তি

জীবন চলার পথে প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু অভাব, হতাশা আর বেদনা থাকে। কারো জীবনই সম্পূর্ণ নিখুঁত নয়। যত বেশি আমরা জীবনের উপর অভিযোগ করি, ততই অশান্তি, দুশ্চিন্তা আর কষ্ট আমাদের ঘিরে ধরে। কারণ অভিযোগের কোনো শেষ নেই। আজ একটার জন্য, তো কাল আরেকটার জন্য। এইভাবে অভিযোগের বোঝা নিয়ে জীবন চলা যায়। কিন্তু এ জীবন কে জীবন বলা যায় না।



আসলে, সুখী হবার আসল মন্ত্র হচ্ছে মানিয়ে নেওয়া। জীবনে প্রয়োজনের ঠুক খেয়ে পরে, আর পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে যারা এগিয়ে যেতে জানে, তারাই সত্যিকারের শান্তি খুঁজে পায়। কারণ শান্তি বাইরের জিনিস নয়, এটা নিজের ভেতরেই তৈরি করতে হয়।

প্রত্যেক মুহূর্তে আমরা যদি যা নেই তার জন্য অভিযোগ না করে, যা আছে তার মধ্যে ভালো থাকার চেষ্টা করি, তাহলে ছোট ছোট সুখের মুহূর্তও অনেক বড় হয়ে ওঠে। জীবনের কঠিন সময়গুলোও তখন সহজ লাগে।

জীবন কখনো আমাদের ইচ্ছেমতো চলবে না। প্রয়োজনের সময় মাথা ঠান্ডা রেখে, নিজের মনের সঙ্গে বোঝাপড়া করে পরিস্থিতি মানিয়ে নেওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে আছে আসল সুখের দরজা। আর এই মানিয়ে নেওয়ার অভ্যাসই আমাদের করে তোলে দৃঢ়, ধৈর্যশীল আর শান্ত মানুষ।

অভিযোগের জীবন নয়, গ্রহণ করার জীবনই সুখের জীবন।

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

বাংলাদেশের সবার প্রত্যাশা

 দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের প্রত্যাশা ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি

অত্যন্ত লজ্জাজনক হলেও সত্য — আজ বিশ্ববাসী জানে যে সততার দিক দিয়ে আমরা এখনও স্বচ্ছতার শীর্ষে যেতে পারিনি। একাধিক আন্তর্জাতিক জরিপ ও প্রতিবেদন আমাদের দেশের দুর্নীতির চিত্রকে বারবার তুলে ধরেছে। এই বাস্তবতা শুধু আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে না, বরং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আন্তর্জাতিক সমাজও চায়, বাংলাদেশ দুর্নীতিমুক্ত হোক। কারণ তারা আমাদের দেশকে একটি সম্ভাবনাময় বাজার ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ হিসেবে দেখছে। যদি আমরা দুর্নীতির শিকল ছিঁড়ে এগিয়ে যেতে পারি, তবে বৈদেশিক বিনিয়োগ যেমন বাড়বে, তেমনি উন্নয়নশীল দেশের তালিকা থেকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং পরবর্তী ধাপে উন্নত দেশের কাতারে উঠে যাওয়াও সময়ের ব্যাপার হবে।



ক্ষমতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা দুর্নীতি

রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ব্যক্তিরাই দীর্ঘদিন ধরে শাসনের আড়ালে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে আসছেন। সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা বলে যারা ক্ষমতায় আসে, তারা এক সময় ক্ষমতার স্বাদে বুঁদ হয়ে পড়ে। রাষ্ট্র পরিচালনার নামে গড়ে তোলে নিজেদের আখের গোছানোর এক অপকৌশল। ফলে প্রশাসনিক কাঠামোর ভেতরে ঢুকে পড়ে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার শিকড়।

দুঃখজনক হলেও সত্য, এই ক্ষমতাকেন্দ্রিক ব্যক্তিরাই দেশের সম্পদ লুটপাট করে, দুর্নীতির জাল বিস্তার করে সমাজকে দিন দিন দুর্বল করে তুলছে। তারা জনগণের অধিকার, ন্যায্য দাবি, এবং স্বচ্ছ শাসনব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে কেবল নিজের অবস্থান মজবুত করতে ব্যস্ত। ফলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে পড়ছে দুর্বল, ন্যায়বিচার হয়েছে উপেক্ষিত এবং সমাজে বৈষম্যের বেড়াজাল দিন দিন আরও ঘনিভূত হয়েছে।
বিগত ১৭ বছর জুড়ে তো মানুষের ভোটাধিকার কথা বলার স্বাধীনতা এমনকি আওয়ামি মতাদর্শের বাহিরে কেউ কথা বলতে পারেন নি।
ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির এই ধারাবাহিকতা ভেঙে দিয়ে সত্যিকারের গণতন্ত্র ও ন্যায়ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই যখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়ায়। নাহলে এই অন্ধকার চক্র থেকে দেশকে বের করা কঠিন হয়ে পড়বে। জনগণের সচেতনতা এবং সাহসিক উচ্চারণই পারে এই অন্যায়কে রুখে দিতে।
সেই চিন্তা চেতনার কথা ভেবে ই বাংলাদেশের জনগনের স্বরনিয় বিপ্লবী উদ্যোগ।
২০২৪ এর জুলাই মাসের শুরুতে কোটা বিরুদি আন্দোলন শুরু হলেও অল্প কয়েক দিনের মধ্যে তা ছাত্র শ্রমিক জনতার সম্মিলিত স্বতঃস্পুর্ত অংশগ্রনে আন্দোলনের গতি বাড়তে থাকে। ৩৬ দিনের এক বিপ্লবী অধ্যায়। হাজার ও তরুণ সেই সাথে অনেক অবুঝ শিশুদের কে নিজের প্রান বিলিয়ে দিয়ে ৫ আগস্ট ২০২৪ (শেখ হাসিনার)পালিয়ে যাওয়ার মধ্য  দিয়ে অবসান হয় দেড় যুগের ও বেশী সময় ধরে চলা ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যাবস্থার।
নতুন করে এদেশের আপামর জনগণ স্বপ্ন দেখে নতুন এক বাংলাদেশের। ৮ আগস্ট  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন বাংলাদেশের প্রথম শান্তিতে নোবেল বিজয়ি ডঃ মোঃ ইউনুস।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তার এক বক্তব্যে বলেছিলেন, "দুর্নীতিকে নির্মূল করাই আমাদের অগ্রাধিকার। সততা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়।" তার সেই উদ্যোগ এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রয়াস আজ অনেকের মনে রেখাপাত করে আছে। যদিও নানা প্রতিকূলতায় সেই প্রচেষ্টা পুরোপুরি এখন ও সফল হয়নি, তবে তার দেখানো পথ ধরে আজ  আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।



দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের শুধু সরকার বা প্রশাসনের দিকেই তাকিয়ে থাকলে চলবে না। প্রত্যেক নাগরিককে সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই বাংলাদেশ হতে পারে একটি স্বচ্ছ, সৎ ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্র।

আজকের বাংলাদেশ তরুণ, উদ্যমী ও সম্ভাবনাময়। আসুন, আমরা সবাই মিলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একটি সুন্দর, স্বচ্ছ ও সম্মানজনক দেশ গড়ি।
এদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন আসুক।২০২৪ এর গন অভুত্যানের আকাঙ্ক্ষা ও পরিবর্তনের প্রত্যাশা
রাজনীতি মানে শুধু ক্ষমতার পালাবদল নয়, বরং মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের দায়িত্ব। আমাদের সমাজে বহুদিন ধরেই এক ধরনের অনিশ্চয়তা, বৈষম্য আর স্বার্থপরতার শাসন চলছে। সময় এসেছে বদলে দেওয়ার। প্রয়োজন ন্যায়, নীতি আর মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এক নতুন রাজনৈতিক ধারা — যেখানে গনতন্ত্রের চর্চা হবে অবিচল, মানুষের কণ্ঠস্বর হবে মুক্ত।

মানুষ তার ন্যায্য নাগরিক অধিকার ফিরে পাক। মৌলিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সুবিচার আর নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা হোক সবার জন্য।

একটি সাম্যের সমাজ গড়ে উঠুক, যেখানে ধনী-গরিব, ক্ষমতাবান-নির্ভরশীল, শহর-গ্রাম — কারও মাঝে বৈষম্য থাকবে না। স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব অটুট থাকুক, দেশের স্বার্থের সঙ্গে কোনো আপোস নয়।

রাজনীতি হোক মানুষের কল্যাণে, সত্য আর ন্যায়ের পক্ষে। দেশ হোক এক উদার, মানবিক, গণতান্ত্রিক এবং উন্নয়নমুখী রাষ্ট্র।

আসুন আমরা প্রত্যেকে আমাদের অবস্থান থেকে এই পরিবর্তনের সপক্ষে কণ্ঠ মেলাই, সচেতন হই এবং এক নতুন সম্ভাবনার পথ তৈরি করি।



সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

জীবনকে সহজ রাখতে জটিলতা এড়িয়ে চলুন।

জীবন যখন সহজ সরল পথে চলে, তখন সেই জীবনে থাকে শান্তি, সুখ আর মানসিক প্রশান্তি। কিন্তু কখনও কখনও আমরা নিজের অজান্তেই জীবনকে জটিল করে তুলি। ছোট ছোট বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা, অন্যের মতামত নিয়ে বেশি ভাবা, কিংবা অপ্রয়োজনীয় চিন্তা-উদ্বেগে ডুবে যাওয়া — এই সবকিছুই আমাদের জীবনকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে জটিল করে তোলে।



জীবনকে সহজভাবে পরিচালনা করার জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো জটিলতা এড়িয়ে চলা। কারণ, একবার যদি জীবনে জটিলতা বাসা বাঁধে, তাহলে তা ধীরে ধীরে আমাদের সুখ, সময় আর মানসিক প্রশান্তি কেড়ে নেয়।

কেন জটিলতা এড়িয়ে চলা দরকার?

★ শান্তি বজায় থাকে: জটিলতা যত কম, মানসিক শান্তি তত বেশি। সহজভাবে জীবনযাপন করলে মন হালকা থাকে।

★ সমস্যার সমাধান সহজ হয়: জটিল চিন্তায় জড়িয়ে গেলে যেকোনো সমস্যার সমাধান পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। সহজভাবে ভাবলে সমাধানও সহজে আসে।

★ সম্পর্ক ভালো থাকে: অপ্রয়োজনীয় ভুল বোঝাবুঝি ও জটিল ভাবনা সম্পর্কের মাঝে দূরত্ব তৈরি করে। তাই সম্পর্ক সহজ রাখতে জটিলতা দূরে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।

★ সময় ও শক্তির সঠিক ব্যবহার হয়: জটিলতা এড়িয়ে চললে নিজের সময় ও শক্তিকে ইতিবাচক কাজে লাগানো যায়।

কীভাবে জটিলতা এড়িয়ে সহজভাবে বাঁচা যায়?

  • ছোট বিষয়কে বড় করে না দেখা।

  • অন্যের কথা নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা না করা।

  • ক্ষমা করতে শেখা।

  • প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত ভাবনা এড়িয়ে চলা।

  • ইতিবাচক চিন্তাভাবনা চর্চা করা।

  • সামর্থের চেয়ে বেশী প্রত্যাশা করা।

জীবন একবারই, তাই সেটাকে সহজ, সুন্দর আর প্রাণবন্ত করে তোলা আমাদের দায়িত্ব। নিজে সুখী থাকুন, অন্যকেও সুখী রাখুন। মনে রাখবেন — সহজ জীবন মানেই প্রকৃত সুখের জীবন।

রবিবার, ১১ মে, ২০২৫

কার কাজ কে করে?

 বাংলাদেশের সরকারী আধা সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান গুলোর জন্য, আউটসোর্সিং ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের জন্য নীতিমালা প্রণয়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একক ভূমিকা: কতটা শ্রমবান্ধব ও আইনসম্মত?  


বাংলাদেশের শ্রমবাজার দিন দিন বহুমাত্রিক হচ্ছে। শুধু উৎপাদনশীল খাত নয়, বরং ডিজিটাল সেক্টর, আউটসোর্সিং, এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করা শ্রমিকদের সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এই শ্রমিকদের অধিকারের সুরক্ষা এবং কর্মপরিবেশ উন্নয়নের জন্য যথাযথ নীতিমালা প্রণয়ন করা সময়ের দাবি। তবে ২০১৮ সালে একবার ও ২০২৫ সালের সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে,সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর জন্য,  আউটসোর্সিং ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় এককভাবে নীতিমালা প্রণয়ন করছে, যা প্রশ্ন তুলছে — এটি কতটা শ্রমবান্ধব এবং আইনগতভাবে কতটা যৌক্তিক?  




 শ্রম সংক্রান্ত নীতিমালার ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়ম ও দায়িত্ব বিভাজন  


বাংলাদেশের সংবিধান এবং বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী, দেশের শ্রমবিষয়ক নীতিমালা প্রণয়নের মূল দায়িত্ব শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের। শ্রমিকদের মজুরি, কর্মঘণ্টা, কাজের পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা, ছুটি, নিরাপত্তা ইত্যাদি নির্ধারণ করে মূলত শ্রমমন্ত্রণালয়।  

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান দায়িত্ব অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, বাজেট বরাদ্দ এবং অর্থায়ন নিশ্চিত করা। মজুরি বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রেও শ্রম মন্ত্রণালয় নেতৃত্ব দেয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ বা বাজেটary impact বিবেচনা করে মতামত প্রদান করে।  


 আউটসোর্সিং ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক খাতের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের একক নীতিমালার প্রশ্ন থেকে যায়?


বর্তমানে যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয় সরাসরি আউটসোর্সিং ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের জন্য নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। যেমন, কত টাকা মজুরি দেওয়া হবে, কীভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে, কীভাবে ছাঁটাই হবে — এসব বিষয় অর্থ বিভাগ থেকেই ঠিক করা হচ্ছে।  


এই পদ্ধতির প্রধান সমস্যা হলো:


* শ্রমিকদের স্বার্থ উপেক্ষা হওয়ার ঝুঁকি:  

অর্থ মন্ত্রণালয় সাধারণত অর্থনৈতিক দিক ও সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দেয়। এতে শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা, শ্রম অধিকার এবং কল্যাণের দিকটি দ্বিতীয়িক হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।  


*  শ্রম আইন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (ILO) নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক:  

বাংলাদেশ ৮টি ILO কনভেনশন অনুমোদন করেছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এই দায়িত্ব শ্রম মন্ত্রণালয়ের। অথচ অর্থ মন্ত্রণালয় এককভাবে নীতিমালা করলে তা ILO নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।  


*  নীতিমালা বাস্তবায়নে সমন্বয়হীনতা:  

শ্রমিকদের মজুরি ঠিক করবে অর্থ মন্ত্রণালয়, কিন্তু বাস্তবায়ন করবে শ্রম মন্ত্রণালয় — এতে প্রশাসনিক জটিলতা এবং দ্বৈত নীতিমালার ঝুঁকি তৈরি হয়।  


*  শ্রমবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের ঘাটতি:  

শ্রমিকদের জীবনমান, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা শ্রমবান্ধব নীতিমালার অংশ। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় এসব দিক বিবেচনা না করে কেবল ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিলে শ্রমিকরা বঞ্চিত হবে।  



 আইনগত দৃষ্টিকোণ  


বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী, শ্রম সম্পর্কিত সব নীতিমালা, বিধিমালা ও মজুরি বোর্ড গঠনের ক্ষমতা শ্রম মন্ত্রণালয়ের। অর্থ মন্ত্রণালয় এতে মতামত দিতে পারে, তবে নীতিমালা প্রণয়নের একক কর্তৃত্ব নেই।  


অর্থ মন্ত্রণালয় এককভাবে শ্রমিকদের জন্য নীতিমালা করলে তা শ্রম আইন এবং প্রশাসনিক কাঠামোর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ফলে শ্রমিকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলে আদালত বা শ্রম আদালতে চ্যালেঞ্জ হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।  


এই বিষয়ে করণীয় কি?


* যথাযথ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে নীতিমালা প্রণয়ন:  

শ্রম মন্ত্রণালয়কে আউটসোর্সিং এবং দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের জন্য আলাদা নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।  


* অর্থ মন্ত্রণালয়কে পরামর্শক ও অর্থায়নকারী ভূমিকায় রাখা:  

অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক সক্ষমতা বিশ্লেষণ ও বাজেট বরাদ্দের বিষয়ে মতামত দিতে পারে।  


* শ্রমিক প্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা:  

নীতিমালা প্রণয়নে শ্রমিক সংগঠন, সুশীল সমাজ ও ILO প্রতিনিধি রাখা জরুরি।  


* বিদ্যমান আইনি কাঠামো অনুযায়ী প্রক্রিয়া চালানো:  

শ্রম আইন অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মজুরি বোর্ড গঠন ও শ্রমবান্ধব নীতিমালা করা উচিত।  


 

শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হলে বাংলাদেশের সরকারী আধা সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান গুলোর জন্য, আউটসোর্সিং ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের জন্য নীতিমালা প্রণয়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একক ভূমিকা থাকলে, আউটসোর্সিং ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের এককভাবে নীতিমালা প্রণয়ন কোনোভাবেই শ্রমবান্ধব বা আইনসম্মত নয়। এ ধরনের উদ্যোগ শ্রমিকদের অধিকারের পরিপন্থী এবং শ্রমবাজারে বৈষম্য তৈরি করতে পারে। তাই শ্রম মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমেই শ্রমবান্ধব, সময়োপযোগী এবং আইনের আওতায় নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি।  


২০১৮ সালে আউটসোর্সিং নীতিমালা প্রনয়নের পর থেকে ই এই নীতিমালার আওতায় শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত প্রত্যেক টা কর্মচারীদের সাথে হওয়া অন্যায় অবিচার বৈষম্য ছাড়া ও আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতির গল্প আছে  কয়েক শতাদিক,২০২৫ সালে আউটসোর্সিং নীতিমালা সংস্কার করে সে অনিয়ম আর দুর্নীতির গল্প তৈরি হবে।

বৈষম্য মুক্ত না যুক্ত হবে বলে মনে করছে

বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ।

বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫

কার্য বিবরনির সার সংকেপ।

 ✊ বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদ: আদর্শ ও কার্য বিবরণী



বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদ দেশের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে আপামর আউটসোর্সিং দৈনিক মজুরি ভিত্তিক ও প্রকল্প খাতে কর্মরত সকল শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায় ও কর্মপরিবেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত একটি অরাজনৈতিক, অপ্রতিষ্ঠানিক এবং কল্যাণমুখী সংগঠন।

আমাদের মূল আদর্শ হলো সকলের কল্যাণে কাজ করা। ব্যক্তিস্বার্থ নয় — বরং আউটসোর্সিং দৈনিক মজুরি ভিত্তিক ও প্রকল্প খাতে কর্মরত সকল সহকর্মীর ন্যায্য দাবী আদায় এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য।

🎯 আমাদের কার্য বিবরণী:

দাবী বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখা।


যেকোনো সংগঠন বা ব্যক্তির সাথে আলোচনা, পরামর্শ গ্রহণ ও সাহায্য নেওয়া, যাতে আমাদের আন্দোলন আরও সুসংগঠিত এবং কার্যকরভাবে পরিচালিত হয়।


শ্রমিকদের পেশাগত মর্যাদা, ন্যায্য বেতন কাঠামো এবং চাকরি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবী পেশ করা। বিশেষ করে ঠিকাদার প্রথা বাতিল করে স্ব স্ব প্রতিস্টানের কর্মচারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।


আউটসোর্সিং খাত কে বিলুপ্ত করে কর্মরতদের অধিকার, সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।


সকল সদস্যের মধ্যে ঐক্যের বন্ধন দৃঢ় করা এবং একে অপরের পাশে থাকা।


আমরা বিশ্বাস করি — ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও সুসংগঠিত আন্দোলনের মাধ্যমেই আউটসোর্সিং কর্মচারীদের অধিকার আদায় সম্ভব।

ব্যক্তিস্বার্থ নয়, সকলের স্বার্থে লড়াই — এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

বুধবার, ৭ মে, ২০২৫

সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ:

সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ: সমাজ গঠনের অপরিহার্য উপাদান

সহনশীল আচরণ আর ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষা করে চলা নিঃসন্দেহে কঠিন, তবে তা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং মহৎকর্ম, তা বোঝা যায় যখন আমরা একত্রে কোনো বড় লক্ষ্য অর্জনের পথে হাঁটি। ব্যক্তি বা সমাজ — উভয়ের উন্নতির জন্য এই গুণদ্বয় অপরিহার্য।

সহনশীলতা মানে শুধু অন্যের ভুলত্রুটি সহ্য করা নয়, বরং ভিন্ন মত, বিশ্বাস ও অবস্থানকে সম্মান করা। প্রতিটি মানুষের চিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুভূতির ভিন্নতা থাকা স্বাভাবিক। এই ভিন্নতাকে সম্মান জানিয়ে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত মানবিকতা।

অন্যদিকে, ভ্রাতৃত্ববোধ সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করে। এটি মানুষকে এক সুতোয় গেঁথে রাখে, বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সহানুভূতির বন্ধন গড়ে তোলে। যখন আমরা কোনো লক্ষ্য সামনে রেখে একত্রে কাজ করতে চাই, তখন এই ভ্রাতৃত্ববোধই আমাদের একতাবদ্ধ রাখে এবং যেকোনো সংকট মোকাবিলায় সাহস যোগায়।

আজকের সমাজে মতপার্থক্য, দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা বা বিশ্বাসের বৈচিত্র্য থাকবেই। এসব পার্থক্যের মাঝেও সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ ধরে রাখা সত্যিই চ্যালেঞ্জের। তবে এই গুণ অর্জন করতে পারলে তা সমাজ ও ব্যক্তিজীবনে শান্তি, উন্নয়ন ও সৌহার্দ্যের বার্তা বহন করবে। 

সহনশীলতা আর ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রেখে চলার উপকারিতাগুলোর সামান্য কিছু  সুন্দরভাবে লিখতে চেষ্টা করছি মাত্র।


সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার উপকারিতা

সহনশীলতা অর্থ হলো ধৈর্য ধারণ করা, অন্যের মতামত ও আচরণের প্রতি সহনশীল থাকা। আর ভ্রাতৃত্ববোধ হলো সকলের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা এবং একে অপরকে ভাই হিসেবে দেখার মানসিকতা। সমাজে এই দুটি গুণ বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর উপকারিতা নিম্নরূপ:

শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা: সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ মানুষের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ কমায় এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করে।

★ সম্প্রীতি ও ভালোবাসা বৃদ্ধি: যখন মানুষ একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ আচরণ করে, তখন পারস্পরিক ভালোবাসা ও বন্ধন দৃঢ় হয়।

মানবাধিকার রক্ষা: সহনশীল ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সমাজে সকলের অধিকার সম্মানিত হয় এবং কারো প্রতি বৈষম্য দেখা দেয় না।

সমাজে সৌহার্দ্য বজায়: পারস্পরিক সহনশীলতা মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় রাখে, যা সমাজের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য।

অশান্তি ও বিরোধ রোধ: ধৈর্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ মানুষকে বিরোধ-সংঘর্ষ এড়িয়ে চলতে শেখায় এবং একে অপরের ভুল ক্ষমা করার মানসিকতা গড়ে তোলে।

নৈতিক উন্নয়ন: এই গুণাবলী মানুষের চরিত্রকে উন্নত করে এবং নৈতিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি করে।

দুর্যোগে সহযোগিতা: সহনশীল ও ভ্রাতৃত্ববোধসম্পন্ন সমাজে মানুষ বিপদ-আপদে একে অপরের পাশে দাঁড়ায়।

বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য রক্ষা: বিভিন্ন ধর্ম, জাতি, ভাষার মানুষকে একত্রিত করে সমাজে বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য বজায় রাখে।

উপসংহার:
সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ একটি আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠার অন্যতম ভিত্তি। এই গুণাবলী ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনে। তাই আমাদের সকলের উচিত এই গুণগুলো নিজেদের জীবনে ধারণ করা।

তাই আসুন, আমরা সবাই নিজেদের মধ্যে এই দুটি গুণ লালন করি। অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হই, মতপার্থক্যকে সম্মান করি এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় করি। এতে ব্যক্তিগত সুখ, সামাজিক শান্তি এবং সামষ্টিক অগ্রগতি — সবকিছুই সম্ভব হবে।

❤️


মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫

২৪-এর গণঅভ্যুত্থান ও ইতিহাসের দায়

 

২৪-এর গণঅভ্যুত্থান ও ইতিহাসের দায় আমাদের সকলের।

২০২৪ সালের ৩৬ টি দিন জুড়ে আন্দোলন সংগ্রাম পরবর্তী  ৫ আগস্ট  এদেশের ছাত্র, শ্রমিক, আর সাধারণ জনতা বুকের রক্ত ঢেলে যে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছিল, তা কেবল একটি দিনের ঘটনা নয় — এটি ছিল শোষণ, দমন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুগ যুগের জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। রাষ্ট্রের বন্দিশৃঙ্খল ভেঙে, সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এই দিনটি এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে/থাকবে।

কিন্তু সময়ের স্রোতে, ইতিহাসের সেই গৌরবময় অধ্যায় অনেকবার বিকৃত করার চেষ্টা হয়েছে, আর হয়তো আগামীতেও হবে। কখনো রাজনৈতিক স্বার্থে, কখনো ক্ষমতার হিসেব-নিকেশে ইতিহাসকে কাটাছেঁড়া করা হয়। কিন্তু ইতিহাস তো কারো একার সম্পত্তি নয়। এটি জনগণের — যারা সেই সময় রাস্তায় নেমেছিল, জীবন দিয়েছিল, স্বপ্ন দেখেছিল একটি শোষণমুক্ত রাষ্ট্রের।

আজকের প্রজন্মের জন্য একটি কথা খুব জরুরি — সময়ের বিবর্তনে কেউ হিরো হয়ে উঠতেই পারে। কারও অবদান ইতিহাসে বড় অক্ষরে লেখা হতেই পারে। তবে সেই হিরোও দেশপ্রেমের পরীক্ষায় ছাড় পাবেন না। দেশপ্রেম মানে শুধু মিছিল-মিটিং নয়, তা হলো জনগণের অধিকার রক্ষা, শোষণ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে থাকা। সে যে-ই হোক, যত বড় নামই হোক, দেশের স্বার্থ আর জনগণের কল্যাণের জায়গায় আপসের সুযোগ নেই। কারণ ইতিহাসের আসল নায়ক সেই মানুষগুলো, যাদের নাম আমরা জানি না, কিন্তু যারা জীবন দিয়ে দেশপ্রেমের আসল মানে দেখিয়ে গেছেন।

তাই ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা রুখে দিয়ে, সত্যকে সামনে আনা এবং হিরো হোক বা সাধারণ, দেশপ্রেমের নামে কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় না দেয়াই আজকের প্রয়োজন।

২৪ এর জুলাই আগস্ট অভুত্যানের সময় নিজের প্রাণ বিলিয়ে দেয়া প্রত্যেক টা মানুষ কে যেন আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তায়ালা শহীদের মর্যাদা দান করেন। 

আর সেই শহিদের রক্তের সাথে যেন কেউ বেঈমানী না করেন। 


সভ্য আচরণবিহীন ব্যক্তিকে নেতৃত্বের আসনে বসানো কেন ঝুঁকিপূর্ণ

মানুষের মধ্যে সভ্যতা, নৈতিকতা ও মানবিকতা — এই গুণগুলো না থাকলে, তার কাছে নেতৃত্বের আসন দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ, নেতৃত্ব মানে শুধু ক্ষমতা নয়; এটি দায়িত্ব, মূল্যবোধ এবং অন্যের কল্যাণের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি।

যে ব্যক্তির আচরণ অসভ্য, যিনি শিষ্টাচার জানেন না, সহনশীলতা ও শ্রদ্ধাবোধের অভাব রয়েছে — তার নেতৃত্ব সংগঠন বা সমাজ উভয় ক্ষেত্রেই বিভ্রান্তি, বিশৃঙ্খলা এবং অবিচারের জন্ম দেয়।

কেন এমন ব্যক্তিকে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত নয়:

সংগঠনের পরিবেশ নষ্ট হয়: অসভ্য আচরণ সম্পন্ন নেতা তার অধীনস্থদের সাথে অপমানজনক ও রূঢ় আচরণ করে। এতে কাজের পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে পড়ে। কর্মীদের উৎসাহ হারিয়ে যায়।
সমাজে অস্থিরতা তৈরি করে: নেতৃত্ব মানেই মানুষের সামনে একটি আদর্শ স্থাপন করা। যদি নেতা নিজেই অসভ্য আচরণ করে, তবে সমাজের ভেতরেও সেই প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ে।
*গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পক্ষপাতিত্ব: অসভ্য আচরণকারী নেতৃত্ব সাধারণত ব্যক্তিস্বার্থে সিদ্ধান্ত নেয়। এতে অন্যায়-অবিচার বাড়ে।

এমন হাজার এ কথা লিখা যাবে মনে হচ্ছে।

উদাহরণ:

  • একটি অফিসে এমন এক ম্যানেজার ছিলেন, যিনি কর্মীদের কাজের ভুল ধরার নামে সবসময় তিরস্কার করতেন, অপমান করতেন। ফলে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা এবং কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছিল। অফিসের উৎপাদনশীলতা কমে যায়, অনেকে চাকরি ছেড়ে চলে যায়। এক সময় সে অফিস টা বন্দ্ব করে দিতে হয়।

  • একটি সামাজিক সংগঠনে এক নেতা তার সমালোচনা শুনলেই রাগান্বিত হতেন, অপমানজনক কথা বলতেন। ফলে সদস্যদের মধ্যে ঐক্য নষ্ট হয়। সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। পরবর্তীতে সে সংগঠন টি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। 

  • এই উদাহরন গুলো ও সমাজে অহরহ আছে। 

এই উদাহরণগুলো প্রমাণ করে যে, সভ্য আচরণহীন নেতৃত্ব একদিকে সংগঠনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়, অন্যদিকে সমাজে বিভেদ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।

উপসংহার:

নেতৃত্বের আসনে এমন ব্যক্তিকে বসানো উচিত, যার মধ্যে নৈতিকতা, সহনশীলতা, মানবিকতা এবং শিষ্টাচার আছে। তিনি কেবল নিজের স্বার্থ নয়, বরং সংগঠন ও সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে কাজ করবেন।

সভ্য আচরণই প্রকৃত নেতৃত্বের প্রথম শর্ত।

জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে কথা গুলো লিখেছি। কোনো ব্যাক্তি বা সংগঠন কে উদ্দ্যেশ্য করে নয়। তাই পড়ার পরে যে কারো জীবনের সাথে মিলে গেলে তা নিতান্ত ই কাকতালীয় মাত্র।